নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামীলীগের দোসর ও বহু অপকর্মের হোতা সোনারগাঁ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো: মতিউর রহমান। ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ২ সেপ্টেম্বর স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সামনে নিজ কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে বিদ্যালয় থেকে বিদায় নেয়। কিন্তু তিনি বিভিন্ন দপ্তরে আবার ঘুরাঘুরি শুরুকরছেন পুনরায় যোগদানের জন্য। সে খবর শিক্ষার্থীদের কানে আসলে তারা গত ১১ ডিসেম্বর বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করে বলেন, অসৎ, দূর্ণীতিবাজ এ প্রধান শিক্ষক যেন এ বিদ্যালয়ে যোগদান করতে না পারে। তাই ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি শিক্ষা উপদেষ্টা, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, দূর্নীতি দমন কমিশন, সোনারগাঁ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রদান করা হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শিক্ষার্থীর সাথে অশালীন আচরন করতো, বিভিন্ন শিক্ষার্থীর শরীরে আপত্তিকর ভাবেস্পর্শ করা। নির্যাতিত শিক্ষার্থীবৃন্দ বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছে বিষয়টি অবহিত করলেও কোন প্রকার প্রতিকার না পেয়ে সকল ছাত্রীদের নিকট বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। যা আন্দোলনে রূপ নেয়। আন্দোলনকৃত শিক্ষার্থীরা তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল মাহফুজ মহোদয়কে এব্যাপারে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দিলে তার নির্দেশে তৎকালীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: আবু তালেব তদন্ত করনের উদ্দেশ্যে বিদ্যালয় আসেন এবং শিক্ষার্থীদের সকল অভিযোগ শোনেন ও শিক্ষার্থীদের ভিক্ষোপের মুখে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের পরামর্শক্রমে দুশ্চরিত্র প্রধান শিক্ষক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট পদত্যাগপত্র জমাদেন এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন এই মর্মে বক্তব্য প্রদান করেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক সকল শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী অভিভাবক ও সাংবাদিক বৃন্দের সম্মুখে দীর্ঘ বক্তব্য দিয়ে বিদায় নেন।

এছাড়াও তার সীমাহিন দূর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সাথে দূর্ব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, শ্রেণি অভীক্ষা নামে বছরে চার বার দুইশ পঞ্চাশ টাকা করে ফি আদায় করতেন। এসএসসি ফরম পূরনে সময় বিশেষ শ্রেণি পরিক্ষার নামে হাজার টাকা, ২টি মডেল টেস্ট ফি একহাজার চারশ টাকা, বিবিধ ফি একহাজার টাকা, বোর্ড ফিসহ জন প্রতি আটহাজার চারশ টাকা করে আদায় করতেন।

শুধুমাত্র বোর্ড ফি র রশিদ দিতেন। বিনা রশিদে টিসি, প্রশংসাপত্র, নম্বরপত্র ইত্যাদি মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা গত তেইশ বছর ধরে আত্মসাৎ করে আসছেন। এমন দুশ্চরিত্র দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক পূনরায় বিদ্যালয়ে ফিরে আসবে বলে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হুমকি দিচ্ছেন।  এমন দুশ্চরিত্র শিক্ষক বিদ্যালয়ে যোগদান করলে আবারো শিক্ষার্থী ও অভিভাবক কোনক্রমেই মেনে নেবে না। সকল শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করার ঘোষণা দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, এ দূর্ণীতিবাজ প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে যোগদান করলে বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাবো।
করিম নামে এক অভিভাবক জানান, তার মতো এমন দূর্ণীতিবাজ প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে যোগদান করলে আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কঠোর কর্ম সূচী দিবো।
সোনারগা উপজেলা বিএনপির সাধারণ মোশারফ হোসেন শিক্ষার্থীদের শান্তনা দিয়ে বলেন, তোমরা যা বলো তাই হবে। এখন তোমরা আন্দোলন না করে ঘরে ফিরে যাও।
সোনারগাঁ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: দেলোয়ার হোসেন শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন যে, তোমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছো তিনিই ব্যবস্থা নিবেন।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।